মেটাল ডিটেক্টর এর কাজ কি, দাম ও বিস্তারিত আলোচনা
মেটাল ডিটেক্টর বা ধাতু শনাক্তকারী যন্ত্রটির সাথে আমরা সবাই মোটামুটি পরিচিত। এটি মূলত লুকিয়ে থাকা মেটাল জাতীয় জিনিস শনাক্ত করতে ব্যবহার করা হয়। এর ব্যবহার সাধারণত বিভিন্ন পাবলিক সমাগমের জায়গায় হয়ে থাকে যেমন কোন স্থানে ঢোকার প্রবেশ মুখে, ছোট-বড় শপিং মলে, বিভন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে যেখানে সাধারণ মানুষের আনাগোনা হয়ে থাকে।
মেটাল ডিটেক্টর কিভাবে কাজ করে
এই যন্ত্রটির ভেতরে একটি সেন্সর সেটআপ করা থাকে যেটি মেটাল বা ধাতু জাতীয় যে কোন বস্তুর উপস্থিতি সহজেই বুঝতে পেরে “বিপ বিপ” শব্দ করে। যার ফলে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মী সহজেই মেটাল শনাক্ত করতে পারে।
নিরাপত্তার জন্য এই যন্ত্রটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা দুষ্কৃতিকারীরা অপরাধ সংঘটিত করার জন্য বিভিন্ন সময় তাদের সাথে ঝুকিপূর্ণ জিনিসপত্র নিয়ে যে কোন জায়গায় প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু যদি প্রবেশ মুখেই মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয় তবে সেই যন্ত্রটি সহজেই তাদের শরীরে লুকানো ক্ষতিকর যন্ত্রটি মূহুর্তের মধ্যে শনাক্ত করে “বিপ” শব্দ করে এবং নিরাপত্তা কর্মী সহজেই সেই ব্যক্তিকে ধরে ফেলতে পারে।
অন্যদিকে আপনি বাংলাদেশেও “গোল্ড ডিগার” বা “আন্ডারগ্রাউন্ড মেটাল ডিটেক্টর” টুল খুঁজে পাবেন যা দিয়ে মাটির নিচে থাকা মেটাল জতিয় জিনিস যেমন গোল্ড, সিল্ভার, তামা, লোহা, ইত্যাদির উপস্থিতি খুঁজে পাবেন ঐ ডিটেক্টর টুল-টার সিগগনালের দ্বারা।
এটি ব্যবহার করতে আপনাকে মাটির যতটা কাছাকাছি সম্ভব টুল-টি নাড়াচারা করতে হবে। যদি এর নির্ধারিত রেঞ্জের মধ্যে কোন মেটাল থাকে তবে এই মেশিন টি বিপ সাউন্ড করবে।
বাংলদেশে কত ধরণের মেটাল ডিটেক্টর পাওয়া যায়?
বেশিরভাগ জায়গায় সাধারণত দুই ধরণের মেটাল ডিটেক্টর পাওয়া যায় যেমন –
হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর
এই টাইপ মূলত হাত দিয়ে ধরে ব্যবহার করা হয়। যেমন প্রবেশমুখে প্রত্যেকের শরীরের কাছে এটি উপর-নিচ নামিয়ে চেক করা হয় যে ঐ ব্যক্তির শরীরে কোন মেটাল রয়েছে কিনা। এটির ওজন হালকা হয়ে থাকে যার ফলে যে কেউ দীর্ঘ সময় ধরে এটি হাতে রেখে ব্যবহার করতে পারে।
বাংলাদেশে এই ধরণের মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবহার সবথেকে বেশি। ছোট-বড় অনেক জায়গাতেই একের অধিক এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এটি হালকা এবং পোর্টাবেল হওয়ার কারণে যেখানে-সেখানে শনাক্তকরণের সুবিধার্তে নিয়ে যাওয়া যায়।
একটি হ্যন্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের মধ্যে কি কি থাকে?
যদিও আমরা একটি মেটাল ডিটেক্টরকে বাইরে থেকে একটি যন্ত্র হিসেবে দেখে থাকি, কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ যার একটি ছাড়া এর পরিপূর্ণতা পায় না। চলুন যেনে নেই কি আছে সেই মেটাল ডিটেক্টরের ভিতরে।
সেন্সরঃ Handheld Metal Detector-এ রয়েছে এক ধরণের উন্নতমানের সেন্সর যার সর্বোচ্চ ৯ ইঞ্চি ডুর থেকে মেটালের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। যদি কেউ তার শরীরের কোন অংশে কোন অস্ত্র-সস্ত্র লুকিয়ে রাখে যেমন ছুরি-চাকু, পিস্তর, সুঁই জতীয় কিছু, তবে হ্যন্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর সহজেই তা শনাক্ত করতে পারে। মোটকথা, এই যন্ত্রটির সেন্সর খুবই শক্তশালী।
অ্যালার্মঃ যখন এটি কোন মেটাল ধরতে পারবে তখন এটির ভেতরকার বিদ্যমান অ্যালার্ম এক ধরণের “বিপ” শব্দ করে। যার ফলে বোঝা যায় নিশ্চয়ই ব্যক্তিটির কাছে মেটাল কিছু রয়েছে।
LED সিগন্যালঃ এর মধ্যে সাধারণত ৩ টি LED লাইট থাকে লাল, সবুজ এবং হলুদ। যখন কাউকে স্ক্যান করা হবে তখন সবুজ নাতি জ্বলে থাকবে আর কিছু বিপদজনক পেলে উজ্জ্বল লাল আলো জ্বলে উঠবে।
ব্যাটারিঃ এটি রিচার্জেবেল ব্যাটারি দ্বারা চালিত একটি ইলেকট্রিক যন্ত্র। ব্যাটারি চার্জ দিয়ে এটি বুবহার করতে হয়। এর ব্যাটারি রিমোভাল হয়ে থাকে এবং প্রয়জনে পরিবর্তন করা যায়।
হ্যান্ডেলঃ এর হ্যন্ডেলটি সম্পূর্ণভাবে ওয়েদার প্রুফ। যেমন শিতকালে এড় উপর তুষার বা বরফ জমবে না। আবার গরমকালে ঘেমে যাবে না। যদি কখনও পানিতে পড়ে যায়ও তা মুছে ফেলে আবার ব্যবহার করা যাবে।
সাথে যা যা থাকছেঃ আপনি এর সাথে পাবেন একটি ,হেডফোন, চার্জার লেদার বেল্ট লুপ (বেল্ট এর সাথে ঝুলিয়ে রাখার জন্য), বেল্ট হোল্ডার।
ওয়াক থ্রো গেইট/Walk Through Metal Detector Gate
এর নাম দ্বারা হয়ত বুঝতে পারছেন এটি হলে গেইটের মত দেখতে বা এক ধরণের গেইট যার মধ্য দিয়ে মানুষ চলাচল করে এবং এটি কারো কাছে মেটাল থাকলে তা শনাক্ত করে ফেলে।
এর উচ্চতা পর্যাপ্ত হওয়াতে ছোট-বড় এবং খুব লম্বা ব্যাক্তিও এর নিচ দিয়ে সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারে। প্রধাণত এটি মূল প্রবেশমুখে স্থাপন করা হয় কেননা সর্বসাধারণের আসা-যাওয়া এখান থেকেই হয়। চলুন জেনে নেই টার্ন্সটাইল/ আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর গেইট এর কার্যকারিতা।
ব্যবহারের ক্ষেত্রসমুহঃ যে সকল জায়গায় প্রতিনিয়ত মানুষের সমাগম-আসা-যাওয়া হয়ে থাকে সেখানে এর ব্যবহার খুবই দরকার। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, শপিংমল, সুপার শপ, ব্যাংক ইত্যাদি জায়গায় এটি ব্যাবহার করে প্রয়োজন কেননা এই সকল জায়গায় জনসমাগম বেশি হয়।
ডিটেকশন জোনঃ বাজারে বিভিন্ন রকমের জোন স্ক্যানিং বিশিষ্ট আর্চওয়ে গেইট পাবেন। মূলত ডিটেকশন জোন বলতে বোঝায় ঐ গেইট টি ঠিক কতটি ভাগে একজন ব্যক্তিকে স্ক্যান করবে। যেমন ৬ জোন বিশিষ্ট একটি গেইট একজনকে ৬ ভাগে ভাগ করে স্ক্যান করে দেখবে শরীরে মেটাল কিছু আছে কিনা। যদি পায়, তবে সে শব্দ করে জানিয়ে দেবে। এমনকি শরীরের কোন অংশে মেটাল পাওয়া গেছে তা এই গেইটের সাইড বডিতে থাকা লাইটের দ্বারা দেখা যাবে।
পাওয়ারঃ এটি মূলত চার্জিংয়ের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাওয়ার খরচ খুবই কম যেমনটা একটি মোবাইল এবং ল্যপটপ চালাতে দরকার পরে। মাত্র ৩৫ ওয়াট পাওয়ার ব্যবহার করে যা এত বড় যন্ত্রের তুলনায় খুবই কম।
অন্যান্য সুবিধাঃ শুধুমাত্র মেটাল ডিটেকশনই নয়, কতজন ভিতরে গেল এবং বের হল, সময়, তাপমাত্রা, বিদ্যুৎ ছাড়া চালান সহ এটি কাস্টোমাইজ করে সুবিধামত ব্যবহার করা যায়।
বাংলাদেশে মেটাল ডিটেক্টর এর দাম কেমন?
হ্যন্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের দাম প্রায় ১৩০০/- থেকে শুরু করে ৩০০০/- টকার মধ্যে পাওয়া যায়। তবে আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর গেইট এর দাম কমপক্ষে ৪৫০০০/- থেকে শুরু হয়ে ১০ লক্ষ পর্যন্তও হয়ে থাকে। তবে এটি কেনার পূর্বে নিজেদের ঠিক কি কি ফিচার বিশিষ্ট গেইট দরকার তা নির্ধারন করা দরকার।
বাংলাদেশে মেটাল ডিটেক্টর কোথায় পাওয়া যায়?
আপনি বিভিন্ন মার্কেটে এটি পাবেন তাছাড়া অনেক অনলাই শপ আছে যেখানে এটি কম দামে পাওয়া যাবে। আমরা (অলেফিন্স ট্রেড কর্পোরেশন) সরাসরি বাহির থেকে অনেক রকমের মেটাল ডিটেক্টর আমদানি করি এবং বাংলাদেশে তা বিক্রি করে থাকি। আপনার এই বিষয়ে কোন সাহায্য লাগলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন এই নম্বরে 01719300940।